সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

কত বছর বয়স থেকে শিশুকে আলাদা শোয়ানো উচিত?

 

জন্মের পর শিশুরা সাধারণত মা-বাবার সঙ্গে ঘুমায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ঘুমের সময় ও ধরন পরিবর্তিত হয়, এবং ঘুমানোর পরিবেশের পরিবর্তনও প্রয়োজন হয়ে পড়ে। একটু বড় হলে সন্তানকে আলাদা বিছানায় শোয়ানোর অভ্যাস করলে তার আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়, যা মা-বাবার বিশ্রাম ও ঘুমের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের দেশে শিশুরা তুলনামূলকভাবে বড় হওয়া পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে ঘুমায়, তবে বিদেশে এর বিপরীত চিত্র দেখা যায়।

কোনটি আসলে ভালো?

মা-বাবা মনে করেন, রাতে শিশুরা তাদের সঙ্গে ঘুমালে তারা ভয় পাবে না এবং ভালোভাবে ঘুমাবে। এছাড়া, রাতের বেলায় শিশুর ঘুম ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা নজর রাখতে সুবিধা হয়।


কিন্তু এটি সঠিক নয়। গবেষকরা বলেছেন, ১৮ মাসের পর থেকেই শিশুকে আলাদা বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস করানো উচিত। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এক বিছানায় বেশি দিন থাকার ফলে শিশুদের স্বাধীনভাবে ঘুমানোর অভ্যাসে বাধা পড়ে এবং তারা ঘুমের মধ্যে স্বাধীনভাবে নড়াচড়া করতে পারে না। এসব বিষয় শিশুদের জন্য বড় হওয়ার পর ঘুমানো ও জেগে ওঠার প্রক্রিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ক্ষেত্রে বড়দের সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমালে শিশুদের সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম বা ঘুমের মধ্যে আচমকা মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে পারে।

দুই বছর বয়সের আগেই শিশুকে মা-বাবার কাছ থেকে আলাদা শোয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। অনেক সময় এই অভ্যাস তৈরি করতে মা-বাবাদের কিছুটা সময় ও পরিশ্রম করতে হয়।

এজন্য ধাপে ধাপে আলাদা ঘুমানোর অভ্যাস করানো সম্ভব। প্রথমে আলাদা ঘরে শোয়ার ব্যবস্থা না করে, মা-বাবার ঘরেই শিশুকে আলাদা বিছানা দিতে শুরু করা উচিত। পরে তিন-চার বছরের দিকে আলাদা ঘরে শোয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

শিশুর ঘর সাজানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন এটি তার পছন্দের আসবাব দিয়ে সজ্জিত হয়, যাতে সেখানে সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। দেয়ালে তার পছন্দের ছবি লাগানো যেতে পারে এবং পছন্দের খেলনা সাজিয়ে রাখা যেতে পারে। খাটের উচ্চতা যেন শিশুদের নাগালের মধ্যে থাকে এবং পড়ার জায়গাটি আরামদায়ক ও খোলামেলা হতে হবে। রাতে শিশুর যাতে ভয় না পায়, সেজন্য ডিমলাইটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

প্রয়োজনে সহজে ডাকতে পারে, সেজন্য মা-বাবার কাছাকাছি রুমে শিশুর থাকার ব্যবস্থা করা ভাল। দুই কক্ষের মধ্যে যাতায়াত সহজ হতে হবে। এতে মা-বাবা সহজে শিশুর দিকে নজর রাখতে পারবেন, এবং শিশুও প্রয়োজন হলে দ্রুত তাদের কাছে আসতে পারবে। পাশাপাশি, শিশুর ঘর থেকে মা-বাবার ঘরে যাওয়ার পথে যেন কোনো কিছু না থাকে যা শিশুকে অসতর্কভাবে আঘাত করতে পারে, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে।

ডা. ফারাহ দোলা, বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

Post a Comment

0 Comments